রাসায়নিক উপাদানে যন্ত্রে তৈরি সাবান বেশি ব্যবহার করছেন! এর ক্ষতিকর দিক গুলি জানা আছে তো!
আমাদের নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিস গুলোর মধ্যে একটি হল সাবান,যাকে আমাদের রূপচর্চার একটি প্রাথমিক অংশ ও বলা যেতে পারে। স্নান করা হোক বা মুখ ধোয়া,সাবানের কোন বিকল্প নেই। তবে এই সাবান হতে পারে আমাদের ত্বকের জন্য ক্ষতিকারক। সাবান তৈরির সময় এমন বেশ কিছু রাসায়নিক ব্যবহার করা হয় যার নিয়মিত ব্যবহার আমাদের ত্বকের জন্য মোটেও ভালো নয়। এর ক্ষতির প্রভাব বুঝতে সাধারণত আমাদের অনেকটা সময় লেগে যায়। কিছু কিছু সময় এই প্রভাব গুলি দীর্ঘস্থায়ী ও হয়।
সাবান তৈরিতে ব্যবহার করা হয় কস্টিক সোডা, যা আমাদের ত্বকের জন্য বেশ ক্ষতিকারক।জেনে অবাক হবেন এই কস্টিক সোডা সাধারণত জং,পুরনো রংয়ের দাগ ইত্যাদি তুলতে ব্যবহার করা হয়।
মানুষের ত্বক বিশেষত মুখের চামড়া বেশ সেনসেটিভ হয়। আর এই চামড়ার থাকে বেশকিছু পরত বা পর্দা।
সবচেয়ে বাইরের পর্দা টির নাম স্ট্রাটাম কর্নেয়াম যা আমাদের ত্বককে বাইরের যে কোনো ক্ষতিকারক পদার্থ থেকে রক্ষা করে।দীর্ঘদিন সাবানের ব্যবহারের ফলে এই পর্দাটি ক্রমে ক্ষতিগ্রস্ত হয় ফলে ত্বক হয়ে ওঠে রুক্ষ ও শুষ্ক।
নিয়মিত সাবানের ব্যবহার আমাদের ত্বককে করে তোলে নিষ্প্রাণ।ত্বকের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যায় ফলে ত্বকে ব্যাকটেরিয়া দ্বারা আক্রান্ত হতে পারে। যা থেকে দেখা যায় বিভিন্ন রকমের চর্মরোগ।
প্রতিদিন সাবান ব্যবহারের ফলে তা আমাদের ত্বকে থাকা গুড ব্যাকটেরিয়াগুলোকে মেরে ফেলে। যার ফলে ত্বক ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।
মাঝে মাঝে সাবান ব্যবহার করা একদমই খারাপ নয় কিন্তু এই সাবানের ব্যবহারে যখন মাত্রাতিরিক্ত হয়ে যায় তখন তা থেকে দেখা যায় অন্যান্য আরো সমস্যা।যেমন অতিরিক্ত সাবান ব্যবহারের ফলে ত্বকের পিএইচ লেভেল বেড়ে যায়। আর এর ফলে বেড়ে যায় এসিডের মাত্রাও।ফলে ত্বকে নানারকম ইনফেকশন হওয়ার সম্ভাবনা দেখা দেয়।
অনেকেই জানেন না কিন্তু সাবানকে সুগন্ধযুক্ত করে তোলার জন্য ফথ্যালাটেস জাতীয় বেশকিছু সিনথেটিক রাসায়নিক ব্যবহার করা হয় এর ফলে স্ক্রিনে বিভিন্ন রকমের এলার্জি তো হতেই পারে ,সেই সঙ্গে স্কিন ক্যান্সারের আশঙ্কা ও কিন্তু সম্পূর্ণভাবে উড়িয়ে দেওয়া যায় না। এছাড়াও এর থেকে মাইগ্রেন জাতীয় নানা সমস্যা ও দেখা দিতে পারে।
এছাড়া অতিরিক্ত সাবানের ব্যবহার কিন্তু আমাদের শরীরে হরমোনের ও বেশকিছু পরিবর্তন ঘটাতে পারে।সাবানে ব্যবহৃত পারাবেন্স আমাদের রক্তে ইস্ট্রোজেনের মাত্রা বাড়িয়ে দিতে পারে। এর মাত্রা অতিরিক্ত বেড়ে গেলে আমাদের শরীরে হরমোনের ক্ষরণ অসম হয়ে পড়ে। ফলে মাংসপেশিতে মেদ জমতে শুরু করে।
এগুলো জেনে নিশ্চয়ই আপনার মনে প্রশ্ন আসছে। তাহলে কি সাবান ব্যবহার করা যাবে না? একদমই তা নয় তবে যে কোন সাবান ব্যবহার করার আগে তার উপকরণ গুলো সম্পর্কে ভালো করে জেনে নেবেন। আর বিশেষজ্ঞদের মতে মুখের চামড়া যেহেতু আমাদের শরীরের অন্যান্য জায়গার চামড়া থেকে বেশ খানিকটা বেশি সেনসেটিভ, তাই মুখে সাবান ব্যবহার না করে কোন ফেসওয়াশ ব্যবহার করা বেশি ভালো।
বিভিন্ন সাবান: ‘লিকুইড হ্যান্ডওয়াশ’, ‘ফ্লোর ক্লিনার’, ‘ডিশ ওয়াশ’ ইত্যাদিতে ‘অ্যান্টিব্যাক্টেরিয়াল’ লেখা থাকলে সতর্ক হতে হবে। কারণ এতে থাকতে পারে ‘ট্রাইক্লোসান’ এবং ‘কোয়ান্টেনারি অ্যামোনিয়াম কম্পাইন্ডস’। এগুলো শরীরে ওষুধের প্রভাব নষ্টকারী ব্যাক্টেরিয়া হিসেবে পরিচিত।
‘ট্রাইক্লোসান’ কারণে ক্যান্সার তৈরির উপাদান ‘কার্সিনজেন’ হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। পাশাপাশি দেহের অন্তঃস্রাব ব্যবস্থার উপর এদের কোনো ক্ষতিকর প্রভাব আছে কিনা সে বিষয়েও গবেষণা চলছে।
তাই প্রাকৃতিক পরিষ্কারক ব্যবহার করার চেষ্টা করতে হবে।
Reviews
There are no reviews yet.