চিনা বাদামের যাদু
সহজে বহনযোগ্য খাবারের মধ্যে বাদামের কথা প্রথমেই আসে। এই ব্যস্ত দিনে কাজের ফাঁকে সময় করে কাজের ফাঁকে যদি প্রতিদিন অল্প করে বাদাম খাওয়া যায় তবে মন্দ হয় না। বাদাম শুধু খেতেই যে অসাধারণ তা নয়, এটি নানা পুষ্টিগুনেও ভরপুর। ফলে এই বাদাম বিভিন্ন রোগ প্রতিরোধ ও প্রতিকারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
বাদামের ধরণ
বাদাম বলতে সব ধরণের বাদামকেই এক্ষেত্রে ধরা হয়, যেমন- চিনাবাদাম, আখরোট , কাজু , আমন্ড , পেস্তা , চেস্ট নাট, ব্রাজিলনাট প্রভৃতি।
বাদামের মধ্যে যা থাকে
আকারে ছোট হলেও সকল প্রকার খাদ্য গুণাগুণ এতে বর্তমান। যেমন- ফ্যাটি অ্যাসিড, ফাইবার, কার্বোহাইড্রেট, লিউটিন, জিজ্যানথিনের মতো অ্যান্টি অক্সিডেন্ট। এক’শ গ্রাম চিনা বাদাম থেকে আমরা পাই, ২.৯ গ্রাম খনিজ, ১.৭ গ্রাম আশ, খাদ্যশক্তি কিলো ক্যালোরি ৬৫৫, প্রটিন ২০.৮ গ্রাম, তেল ৫৮.৯ গ্রাম, শর্করা ১০.৫ গ্রাম, ক্যালসিয়াম ২৩০ মিলি গ্রাম ও লৌহ .৫ মিলি গ্রাম খাদ্যগুণ পাওয়া যায়।
কোলেস্টেরল কমায় চিনা বাদাম
বাংলাদেশের মানুষের মধ্যে বর্তমানে কোলেস্টেরলে আক্রান্ত হওয়ার প্রধান কারণ হল অপুষ্টিকর ও তৈলাক্ত খাবার। শরীরের মাত্রাধিক কোলেস্টেরল হৃদরোগ, উচ্চ রক্ত চাপ, ওজন বৃদ্ধি ও ডায়াবেটিস এর মতো কঠিন রোগ সৃষ্টি করে।বাদামের অসাধারন কার্যকরী ফ্যাট শরীর থেকে কোলেস্টেরল কমাতে সাহায্য করে। তাছাড়া, এই বাদাম শরীরের চর্বি কমাতেও সাহায্য করে। শরীরের কোলেস্টেরল কমাতে প্রতিদিন ১০-১২ টি বা এক মুঠো চিনাবাদাম খেতে পারেন।
ডায়াবেটিস প্রতিরোধে সাহায্য করে
চিনা বাদাম রক্ত থেকে সুক্রোজ এর মাত্রা কমায়। প্রতিদিন সকালে এটি নাস্তার সাথে খেতে পারেন। তাছাড়া রাতে ১০-১৫ টি বাদাম পানিতে ভিজিয়ে রেখে সকালে খেলে ডায়াবেটিস অনেকাংশে নিয়ন্ত্রণে থাকে। চিনা বাদামের অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট দুর করতে বিশেষ ভাবে কার্যকরী।
ওজন কমাতে বেশ কার্যকরী
বাংলাদেশে অতিরিক্ত ওজনের সমস্যায় ভুগছেন এমন মানুষের সংখ্যা অনেক। শরীর থেকে ওজন কমাতে ভালো ফ্যাটের প্রয়োজন অত্যাবশ্যক। চিনা বাদাম থেকে আপনি সেই ভালো ফ্যাট পাবেন। প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় এক মুঠো বাদাম যুক্ত করে আপনি অতিরিক্ত ওজনের সমস্যা থেকে মুক্তি পাবেন। তাছাড়া এটি আপনার শরীরের শক্তি বৃদ্ধি করতেও সহায়তা করে।
স্মৃতি শক্তি বাড়াতে সাহায্য করে
কিছু কিছু মানুষের স্মৃতিশক্তি তুলনামুলক ভাবে অন্যদের চেয়ে কম। খুব অল্প বয়সেই অনেকেই ভুঘছেন মস্তিষ্কের সমস্যায়। ভুলে যাচ্ছেন সামান্য বিষয় এবং অনেক চেষ্টা করেও মনে রাখতে পারছেন না। এমনটা হয় যখন আমাদের মস্তিস্ক পরিমান মতো পুষ্টি পায়না। একে মস্তিষ্কের খাবার হিসেবে গন্য করা যায়। চিনা বাদামে প্রচুর পরিমানে বি৩ আছে যা মস্তিষ্কের সুস্বাস্থ্য নিশ্চিত করে। তাই প্রতিদিন চিনা বাদাম বা এর মাখন খাবেন, যাতে করে আপনি স্বয়ংক্রিয় মস্তিস্ক পেতে পারেন।
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়
ছোটো ছোটো কারনে রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন যেমন ঠাণ্ডা, কাশি, মাথা ব্যথা, দুর্বলতা, খাওওায় অরুচিআ এবং নিদ্রাহীনতা। শরীরে সঠিক পরিমানে পুষ্টি না থাকলে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যায়। এটি শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। চিনা বাদামের অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট শরীরে কঠিন রোগকে বাসা বাধতে বাঁধা দান করে। তাই, প্রতিদিন চিনা বাদামখেয়ে শরীরের রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ান।চিনা বাদামের সকলস্বাস্থ্য উপকারিতা উপভোগকরতে প্রতিদিন অবশ্যইএকমুঠো চিনা বাদামখেতে পারেন। স্বাস্থ্যকরজীবনযাপন এর জন্য চিনাবাদাম আপনাকে বিশেষভাবে সাহায্য করবে।
বাদাম খেয়ে কেন পানি খেতে নেই?
বাদাম খেয়ে পানি খেতে নেই। ছোটবেলা থেকে এই কথাটা শুনে বড় হয়েছি আমরা। বিশেষ করে চীনা বাদাম। কেন বাদাম খাওয়ার পর পানি খেতে বারণ করা হয় সে বিষয়ে যদিও স্পষ্ট ধারণা নেই আমাদের। কী হয় বাদাম খাওয়ার পর পানি খেলে?
চিকিৎসকরা বলেন, চীনা বাদাম শরীর গরম করে। তাই সাধারণত শীতকালেই চীনা বাদাম বাজারে কিনতে পাওয়া যায়। বাদাম খেলে শরীরে যে তাপ উৎপন্ন হয় পানি তা ঠান্ডা করে দেয়। বাদাম খেতে খেতে পানি খেলে তাই সর্দি-গর্মি লেগে যেতে পারে। আবার বাদামে যেহেতু তেল থাকে তাই তারপর পানি খেলে খাদ্যনালীতে ফ্যাট জমা হয়। ফলে কাশি হয়। বাচ্চারা বাদাম খাওয়ার পর পানি খেলে হজমে সমস্যা হয়। আবার অনেক সময় বাদামে অ্যালার্জির কারণে গলায় চুলকানির সমস্যাও হতে পারে। তখন পানি খেলে পরিস্থিতি আরও খারাপ দিকে যেতে পারে।
বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, যদি পানি খেতেই হয় তা হলে অন্তত ১৫ মিনিট অপেক্ষা করে তবে পানি খান। সূত্র : ওয়েবাসইট।
Reviews
There are no reviews yet.